"হয়তো আর কোনওদিনই ফেরা হবে না!’’- আজও আছে মানিকতলা খ্রিস্টান গোরস্থানে

 তরু আজও আছে মানিকতলা খ্রিস্টান গোরস্থানে নয়ত শুধু ১২, রমেশ দত্ত স্ট্রিটে তাঁর নিজের ভুবনে।  


‘‘হয়তো কোনও একদিন ফিরব। হয়তো আর কোনওদিনই ফেরা হবে না!’’

তরু দত্ত। প্রথম বাঙালি মহিলা, যিনি ফরাসি এবং ইংরেজি এই দুই ভাষাতেই লেখার জন্য এখনও আলোচিত। মাইকেল মধুসূদন দত্ত যদি বিদেশি ভাষায় সাহিত্য রচনার জন্য বাঙালি হিসেবে অগ্রণী পুরুষ হন, মেয়েদের মধ্যে ছিলেন তরু দত্ত। মাত্র ২১ বছরের জীবনে ঝড় তুলেছিলেন সাহিত্য জগতে।


আজ ৪ঠা মার্চ। আজকের দিনেই জন্মগ্রহণ করেন তরুলতা দত্ত ওরফে তরু দত্ত। ১৮ বছর বয়সে, তরুর লেখা  ফরাসি কবি লেকন্টে ডি লিসেল এবং জোসেফিন সোলারির উপর  নিবন্ধগুলি বেঙ্গল ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হয়। সাহিত্যিক হিসেবে এটি ছিল একক প্রকাশিত লেখা যা তাঁর পরবর্তী  সাহিত্যকর্মের পথ প্রশস্ত করেছিল। তরু  প্রচুর ফরাসি কবিতা ইংরেজিতে অনুবাদ করতে শুরু করেছিলেন,  বেশ কয়েকটি খণ্ড আকারে তা প্রকাশিত হয় এবং  যথেষ্ট প্রশংসা লাভ করে। 


ইংল্যান্ড-এ ফরাসি ভাষায় উচ্চশিক্ষা লাভ করেন তরু দত্ত। ১৮৭১ - ১৮৭৩ সাল। ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে "হাইয়ার লেকচারস ফর উইমেন" -এ যোগদান করেন তিনি। সিডনির সাসেক্স কলেজের রেভরেন্ড জন মারটিন-এর কন্যা মেরি মারটিন-এর সঙ্গে পরিচয় হয় তরু দত্ত-র। অতঃপর গভীর বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে তাদের মধ্যে। দেশে ফিরে আসার পরেও ওনারা চিঠির আদানপ্রদান চালিয়ে যান।


তরু ফরাসি নারীবাদী লেখক ক্লারিস বদর ( Clarisse Bader) দ্বারা গভীরভাবে অনুপ্রাণিত ছিলেন। ক্লারিসের  রচনাগুলি বাংলায়  এবং ইংরেজি ভাষায় অনুবাদ করার ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন তরু। তবে বাধা  হয়ে দাঁড়িয়েছিল তাঁর ভগ্ন  স্বাস্থ্য।  জীবন শেষ হয়ে আসছে বুঝতেন তরু।  বন্ধু মেরি মার্টিনের কাছে তাঁর শেষ চিঠিতে নিজের মনের কথা লিখেছেন  তরু। নিজের মনের কষ্ট , শারীরিক অসুবিধার কথা লিখেছিলেন।  নিজেরই সঙ্গে তীব্র  বোঝাপড়া  চালাতে হচ্ছিল তাকে। ছোট জীবন আরও  ছোট হয়ে আসতে থাকে। হতাশা  ভীড় করে।  


তরু আজও আছে মানিকতলা খ্রিস্টান গোরস্থানে নয়ত শুধু ১২, রমেশ দত্ত স্ট্রিটে তাঁর নিজের ভুবনে।  



তথ্যসুত্র - আনন্দবাজার পত্রিকা, উইকিপেডিয়া, দারুক ডট কম 


Comments

Popular posts from this blog

হারানো এক জয় সেবাস্টিয়ান আর কলকাতার গপ্পো ❤️

জিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার ১৭২ বছর

৩ মাস ধরে জ্বলেছিল এই পৃথিবী সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯তলা গ্রন্থাগার!